প্রিয় শিক্ষক হামিদ স্যার আজ ২৪/০৫/২০২০ তারিখ ইফতারের কিছু পূর্বে আমাদের ছেড়ে অজানা পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। এই প্রিয় শিক্ষককে নিয়ে স্কুল জীবনের কত না অম্ল মধুর স্মৃতি।
স্যারের চলে যাওয়া সংবাদটি শোনার পর থেকে সেই সব স্মৃতি গুলোই বারবার ঘুরপাক করছে। চোখ দুটো বার বার ভিজে যাচ্ছে।
এক জন পুরাতন বয়োবৃদ্ধ শিক্ষা গুরুকে হারালাম। প্রথম শ্রেণি থেকে একেবারে স্কুলের শেষ পর্যন্ত (এস এস সি) তিনি আমাদের শিক্ষক ছিলেন। কতদিন যে পড়া করবার জন্য তার বেতের মার সহ্য করেছি কিন্ত কখনই তার প্রতি বিরক্ত হই নাই এখন মনে হচ্ছে আমাদের মানুষ করবার জন্য তাঁর কত না প্রচেষ্টা ছিল। হাতের লেখা সুন্দর করবার জন্য কত ক্লাশে লেখার প্রতিযোগিতা করতেন।লেখা দেখে কাউকে ভাল, মন্দ বা খুব ভাল লিখে দিতেন। আমরা আরো ভাল করবার জন্য উৎসাহিত হতাম।
আর এক জন বেঁটে খাটো ফর্সা হামিদ স্যার আর বেত নিয়ে আমাদের ভয় দেখাবেন না। স্কুলের ভিতরে তিনি অনেক সময় রান্না করে খেতেন। একটা স্টোভে তিনি রান্না করছেন স্পষ্ট সেটা দেখতে পাচ্ছি। প্রিয় স্যার আপনি আজ ভিন্ন পৃথিবীর মানুষ। আমাদের কোন আচরণে কষ্ট পেযে থাকলে মনে ব্যাথা পেলে ক্ষমা করে দেবেন। দু হাত তুলে প্রার্থনা করি পরপারে আপনি যেন ভাল থাকেন। সৃষ্টি কর্তা আপনাকে বেহেস্তে যেন স্থান করে দেন।
২০১৯ সালে স্কুলের বর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানের সময় স্যারকে নিয়ে ১১ ই নভেম্বর আমার এই ক্ষুদ্র লেখাটি লিখেছিলাম।
চিপটা ধরেই হামিদ স্যার
উপরে দিতেন টান,
ছোট কালের সেই বয়সে
বেরিয়ে যেতো প্রান।।
পড়া যারা করেনি তাদের
ভয়ার্ত সব মুখ,
জামা তুলেই পিছন দিকে
বেতের বাড়ির সুখ।।
বেঁটে খাটো ও ফর্সা মতন
তিনি হামিদ স্যার,
পাজামা পাঞ্জাবী পরতেন
মুখটা কেমন ভার।।
পড়া শোনার বিষয়ে ছিল
সবার প্রতি নজর,
ফাঁকি দিলেই সত্যিই ছিল
অন্য রকম খবর।।
হাতের লেখা লিখতে দিয়ে
করতো পরীক্ষা,
স্কুল জীবনে তাদের থেকে
পেয়েছি শিক্ষা।।
হামিদ স্যার সকল সময়ে
চাইতেন ছাত্রের ভাল,
পুরনো দিনের সেই স্মৃতি
মনটা বিষাদে কালো।।
শিক্ষক তিনি শিক্ষা গুরু
ভাল যেন থাকেন,
দু হাত তুলে প্রার্থনা করি
সুস্থ্য ভাবে বাঁচেন।।
লেখাঃ পৃথ্বীশ কুমার সরকার